প্রতিদিনের বাছাইকৃত সব চাকরির খবর ২০২২ এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আজকের চাকরির খবর, এ সপ্তাহের চাকরির খবর থাকছে, সরকারি চাকরির খবর, পত্রিকার নিয়োগ সার্কুলার সহ নতুন সকল চাকরির সংবাদ। দেশ বিদেশের সেরা চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সবার আগে পেতে আমাদের সাইট ভিজিট করুন।

Full width home advertisement

Post Page Advertisement [Top]

The Character of Prophet Muhammad ﷺ: The Proofs of Prophethood Series |  Yaqeen Institute for Islamic Research 
 
১। মদীনায় অবস্থানকালে মদীনার আজমত ও বুজুর্গী সব সময় অন্তরে হাজির রাখিবে। এই কথা মনে করিবে, আল্লাহ পাক আপন মাহবুব নবীর হিজরতের জন্য এই শহরকে পছন্দ করিয়াছেন। হুজুর (সাঃ) এখানে     থাকিতেন, এই শহরের অলিতে গলিতে চলাফেরা করিতেন। শরীয়তের হুকুম আহকাম এখানেই অবতীর্ণ হয়। হজুর (সাঃ) এর ছুন্নত সমূহ ইহাতেই জারি হয়। এই শহরে আসিয়া হুজুর (সাঃ) জেহাদ করেন।


    এই শহরে হজুর (সাঃ) শায়িত আছেন। আরও চিন্তা করিবে, এই শহরের মাটিতে আমার প্রিয় নবীর     কদম পড়িত। হয়ত যেখানে হুজুর (সাঃ) এর কদম পড়িয়াছে আমার কদম সেখানে পড়িতেছে। তাই     খুব ধীরস্থিরভাবে কদম রাখিবে। তারপর মনে করিবে আমার প্রিয়নবীর ছাহাবারা এই শহরে     থাকিতেন। হুজুর (সাঃ) এর বরকতওয়ালা কালাম শুনিয়া তাঁহারা ধন্য হইতেন। তারপর আফছোছ করিতেন, হায় ! এই দুনিয়াতে আমি প্রিয় মাহবুব নবী (সাঃ) এর এবং ছাহাবাদের দর্শন     হইতে বঞ্চিত হইয়া গেলাম। না জানি আমার বদ আমলের দরুন আখেরাতেও তাঁহাদের দর্শন লাভ হইতে বঞ্চিত থাকিয়া যাই। আবার সঙ্গে সঙ্গে এই শুকরিয়াও আদায় করিবে যে, আমার বাড়ী ঘর কত দেশ দেশান্তর দূরে হওয়া সত্তে¡ও আল্লাহ পাক আমাকে হুজুর (সাঃ) এর দরবার পর্যন্ত আসিবার সৌভাগ্য দান করিয়াছেন। আশা করি সেই মেহেরবান আল্লাহ কেয়ামতের দিন আমাকে হুজুর (সাঃ) এর  মোবারক দর্শন হইতে বঞ্চিত করিবেন না। আল্লাহ পাক অধম লেখক ও প্রকাশককে পরকালে হুজুর     (সাঃ) এর মোবারক দীদার দ্বারা ভাগ্যবান করুন। আমিন ছুম্মা আমিন। 

২। রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে মুহব্বত করল সে আমাকে মুহব্বত করল । আর যে আমাকে মুহব্বত করল সে জান্নাতে আমার সাথী হবে।

৩। হযরত জুননুন মিছরী (রহঃ) বলেন, আমি একদিন বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করিতেছিলাম। সমস্ত     লোক অপলক নেত্রে কা’বা শরীফের দিকে দেখিতেছিল। হঠাৎ এক লোক আসিয়া এই বলিয়া দোয়া করিতে লাগিল, হে পরওয়াদেগার ! তোমার দরবার হইতে পলাতক আবার তোমার দরবারে ধর্ণা দিয়াছে। আয় আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ঐ জিনিস চাহিতেছি যাহা আমাকে তোমার অধিকতর নিকটবর্তী করিবে তোমার নিকট এমন এবাদতের প্রার্থনা করিতেছি যাহা তোমার সবচেয়ে বেশী প্রিয়। হে আল্লাহ ! আমি তোমার পছন্দনীয় বান্দাগণ এবং আম্বিয়ায়ে কেরামের উছিলায় প্রার্থনা করিতেছি, তুমি আমাকে তোমার মহব্বতের এক পেয়ালা শরাব পান করাইয়া দাও এবং মারেফাতের দ্বারা আমার অন্ধকার দূর করিয়া দাও, যেন আমি মারেফাতের বাগিচায় গিয়া তোমার সহিত গোপন আলাপ করিতে পারি। এইসব বলিয়া তাঁহার চক্ষু হইতে টপ টপ করিয়া পানি জমিনে পড়িতে লাগিল। অতঃপর তিনি হাসিতে হাসিতে রওয়ানা হইলেন। হযরত জুননুন মিছরী বলেন, লোকটি হয়ত কোন কামেল বুজুর্গ না হয় পাগল হইবেন। এই কথা ভাবিয়া আমি তাঁহার পিছনে পিছনে চলিলাম। সে আমাকে বলিল, তুমি কোথায়     যাইতেছ? আপন কাজে যাও। আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, আল্লাহ আপনার উপর রহমত নাজেল করুন, আপনার নাম কি ? তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ! আমি বলিলাম, আসলে ত সকল মানুষই আল্লাহর বান্দা, আপনার আসল পরিচয় দিন।     তিনি বলিলেন, আমার পিতা আমার নাম রাখিয়াছেন ছাদুন। বলিলাম, লোকে যাহাকে ছাদুন পাগলা বলে সেই ছাদুন নাকি, তিনি বলিলেন হ্যাঁ । আমি বলিলাম, যাহাদের উছিলায় দোয়া করিলেন সেই পছন্দনীয় বান্দা কাহারা? তিনি বলিলেন, যাহারা আল্লাহর দিকে এমনভাবে দৌড়ায় যেমন কোন ব্যক্তি প্রেমের পথে দৌড়ায়। তারপর বলেন, জুননুন! তুমি আছবাবে মারেফত জানিতে চাও? তারপর তিনি দুইটি বয়াত পড়িলেন। যাহার অর্থ হইল এই যে, মারেফাতওয়ালাদের দিল সব সময়     আল্লাহ স্মরণে আসক্ত হইয়া থাকে     এবং আসক্তিরত কান্না করিতে থাকে। এমনকি তাঁহার দরবারে     তাহারা ঘর বানাইয়া লয়। আর সেখান হইতে কোন বস্তু  তাহাদিগকে হটাইতে পারে না।

৪। হযরত জোনায়েদ বাগদাদী (রহঃ) বলেন, আমি একদিন রাত্রি বেলায় তওয়াফ করিতেছিলাম, তখন   দেখিতে পাই, এক অল্প বয়স্ক মেয়ে তওয়াফ করিতেছে এবং কতগুলি কবিতা গাহিতেছে যাহার অর্থ   এই-“আমি আপন এশক ও মহব্বতকে যতই গোপন রাখিয়াছিলাম, কিন্তু উহা কিছুতেই গোপন রহিল     না, বরং আমার নিকট মনে হয় তাঁবু গাড়িয়াছে”। “মাহবুবের ইয়াদে আমার অন্তর চমকিয়া উঠে, যদি আমি মাহবুবের নৈকট্য চাই তবে সাথে সাথেই সে     আমার নিকট আসিয়া যায়। “আবার যখন সে আত্মপ্রকাশ করে তখন আমি তাহার মধ্যে বিলীন হইয়া যাই, তখন আমি অপরিসীম     স্বাদ লজ্জত পাইতে থাকি।”

 

হযরত জোনায়েদ (রহঃ) বলেন, আমি বলিলাম, হে মেয়ে ! তোমার লজ্জা হয় না! এতবড় মোবারক   স্থানে তুমি গান গাহিতেছ? মেয়েটি আমার দিকে তাকাইয়া বলিল, জোনায়েদ! 

 

“আল্লাহর ভয় না থাকিলে তুমি আমাকে আরামের নিদ্রা ত্যাগ করিয়া চক্কর দিতে দেখিতে না।”

“তাঁহার মহব্বতের সংস্পর্শে আমি ভবঘুরের মত ফিরিতেছি এবং তাঁহার মহব্বতই আমাকে পেরেশান     করিয়া রাখিয়াছেন।

তারপর মেয়েটি জিজ্ঞাসা করিল, জোনায়েদ ! তুমি আল্লাহর তাওয়াফ করিতেছ না বায়তুল্লাহর     তওয়াফ।     আমি বলিলাম, বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করিতেছি। ইহা শুনিয়া মেয়ে আছমানের দিকে মুখ     করিয়া বলিতে লাগিল হে আল্লাহ! তোমার বড় আশ্চর্য শান। মানুষ পাথরের মতই এক মাখলুক। সে     আবার অন্য এক     পাথরের তওয়াফ করিতেছে। তারপর সে আরও তিনটি বয়াত পড়িল। যাহার অর্থ     এই-

“মানুষ পাথরের তওয়াফ করিয়া আপনার নৈকট্য তালাশ করে। তাহাদের দিল স্বয়ং পাথর হইতেও     শক্ত। তাহারা পেরেশানীতে ঘুরিয়া বেড়ায় এবং আপন ধ্যাণ ধারনা মত নৈকট্যের মহলে পৌঁছিয়া     গিয়াছে। যদি তাহারা প্রেমের দাবী সত্য হইত তবে জড়বাদী গুণাবলী দূর হইয়া তাহার মধ্যে আল্লাহর     মহব্বতের গুণাবলী পয়দা হইত। ”

হযরত জোনায়েদ (রহঃ) বলেন, আমি তাহার এই সব কথা শুনিয়া বেহুশ হইয়া পড়িয়া গেলাম। হুশ     হইলে পর দেখিলাম, মেয়েটি আর সেখানে নাই।
৫।  বিখ্যাত ছুফী ও বুজুর্গ হজরত শায়েখ আহমদ রেফায়ী (রহ্ঃ) ৫৫৫ হিজরী সনে হজ¦ সমাপন করিয়া জেয়ারতের জন্য মদীনায় হাজির হন। তিনি রওজা শরীফের সামনে দাঁড়াইয়া এই দুইটা বয়াত পড়েন-    

”দুরে থাকা অবস্থায় আমি আমার রূহ কে হুজুর (ছঃ)-এর খেদমতে পাঠাইয়া দিতাম, সে আমার নায়েব     হইয়া আস্তানা শরীফে চুম্বন করিত। আজ আমি সশরীরে দরবারে হাজির হইয়াছি। কাজেই হুজুর আপন     হস্ত মোবারক বাড়াইয়া দিন যেন আমার ঠোঁট তাহা চুম্বুন করিয়া তৃপ্তি হাছেল করিতে পারে।” 


    বয়াত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কবর শরীফ হইতে হাত মোবারক বাহির হইয়া আসে এবং হজরত রেফায়ী     (রহ্ঃ) তাহা চুম্বন করিয়া ধন্য হন। বলা হয়, সেই সময় মসজিদে নব্বীতে নব্বই হাজার লোকের     সমাগম ছিল। সকলেই বিদ্যুতের মত হাত মোবারকের চমক দেখিতে পায়। তাঁহাদের মধ্যে মাহবূবে     ছোবহানী হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ্ঃ) ছিলেন।

 
৬।     শায়েখ আবুু নছর আবদুল ওয়াহেদ কারখী (রহঃ) বলেন, আমি হজ¦ সম্পাদন করিয়া জেয়ারতের জন্য     হাজির হই। হুজরা শরিফের নিকট আমি বসা ছিলাম। ইত্যবসরে ঐখানে দিয়ারে বিকরের শায়েখ আবু বকর আসিয়া কবর শরিফে ছালাম করেন, আস্সালামু আলাইকা, ইয়া রাছূলাল্লাহ! তখন কবর শরিফ হইতে উত্তর আসে, অ- আলাইকাচ্ছালামু ইয়া আবা বকরিন। এই উত্তর উপস্থিত সমস্ত লোকেই     শুনিয়াছিল।
৭।     এবনে জালা (রাঃ) বলেন, আমি মদিনা মোনাওয়ারায় বড় অভাবের সম্মুখীন হইয়াছিলাম। হুজুর (ছঃ)-     এর কবরের নিকট আরজ করিলাম, হুজুর (ছঃ)! আমি আপনার মেহমান! ইত্যবসরে আমার একটু চোখ     লাগিয়া আসিল। হুজুর (ছঃ) আমাকে একটা রুুটি দিলেন, আমি উহার অর্ধেক খাইলাম। জাগ্রত     হইয়া দেখি বাকী     অর্ধেক আমার হাতে।
৮।     আল্লামা কাস্তালানী (রহঃ) বলেন, আমি একবার এমন কঠিন রোগে আক্রান্ত হই যে, ডাক্তারগণ পর্যন্ত     নিরাশ হইযা যায়।  অবশেষে আমি মক্কা শরীফ অবস্থানকালে হুজুর (ছঃ)- এর উছিলায় দোয়া     করিলাম। রাত্রি বেলায় আমি স্বপ্নে দেখি, এক ব্যক্তির হাতে একটি কাগজের টুকরা, তাহাতে লেখা     রহিয়াছে, ইহা আহমদ বিন্ কাস্তালানীর জন্য ঔষধ। হজুরে পাক (ছাঃ)-এর তরফ হইতে তাঁহার     নির্দেশে ইহা দান করা হইয়াছে।
৯।     হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমার পিতা আবু বকর (রাঃ) মৃত্যু শয্যায় অছিয়ত করেন, মৃত্যুর পর  আমার লাশ হুজুর (ছঃ)- এর কবর শরীফের নিকট নিয়া আরজ করিবে, ইয়া রাছূল্লাল্লাহ (ছঃ)! ইহা আবু  বকরের লাশ। অনুমতি হইলে আপনার নিকট সমাহিত হইতে চায় এজাজত পাইলে তোমরা আমাকে  সেখানে দাফন করিও, নচেৎ মুসলমানদের সাধারন কবরস্থান বাকীতে দাফন করিও, তখন ভিতর হইতে  আওয়াজ আসিল, দোস্তকে ইজ্জত ও একরামের সহিত আমার নিকট পোঁছাইয়া দাও।
    আল্লামা কাস্তালীন (রহঃ) লিখিয়াছেন, অর্থঃ হে আল্লাহ্র নবী! আমি আপনার নিকট সুপারিশ চাই এবং এই  প্রার্থনা করি যেন আমার মৃত্যু হয় আপনার দ্বীনের উপর ও আপনার ছুন্নতের উপর। হুজুর (ছঃ)-এর  উছিলায় দোয়া করার তরীকা সমস্ত বুজুর্গনে দ্বীন জায়েজ রাখিয়াছেন।
    হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে, হজরত  আদম (আঃ) হইতে যখন গন্দম খাওয়ার অপরাধ ঘটিয়া যায়, তখন তিনি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উছিলা দিয়া আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন। আল্লাহ জিজ্ঞাসা করেন, হে আদম! মোহাম্মদ (ছঃ) কে তাহা কি করিয়া জানিলে? আমি তো এখন পর্যন্ত তাহাকে পয়দাও     করি নাই। তখন হজরত আদম (আঃ) বলিলেন, হে আল্লাহ! আপনি যখন আমাকে পয়দা করেন এবং আমার মধ্যে জান ঢালিয়া দেন, তখন আরশের খুঁটির উপর আমি লেখা দেখিতে পাই- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মাদুর রাছুল্লুল্লাহ। তখন আমি বুঝিতে পারিয়াছি যে, আপনার মোবারক নামের সহিত যাহার নাম মিলায়াছেন, সে নিশ্চই সম্স্ত মাখলুকের মধ্যে আপনার নিকট সবচেয়ে বেশী প্রিয় হইবে। আল্লাহ্ বলেন,     নিশ্চয়ই সে আমার নিকট সবচেয়ে অধিক প্রিয়। ত্হাার উছিলায় যখন তুমি প্রার্থণা করিয়াছো তখন আমি     তোমার গুণাহ মাফ করিয়া দিলাম।

 

দোআটিকে নিয়মিত ওযীফা করিয়া নিবে এবং সর্বদা অধিক পরিমান পাঠ করিতে চেষ্টা করিবে-
 

উচ্চারনঃ ইয়া হাইয়্যু ইয়া কায়্যুম বিরাহমাতিকা আসতাগিজ।

No comments:

Post a Comment

Advertisement