প্রতিদিনের বাছাইকৃত সব চাকরির খবর ২০২২ এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আজকের চাকরির খবর, এ সপ্তাহের চাকরির খবর থাকছে, সরকারি চাকরির খবর, পত্রিকার নিয়োগ সার্কুলার সহ নতুন সকল চাকরির সংবাদ। দেশ বিদেশের সেরা চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সবার আগে পেতে আমাদের সাইট ভিজিট করুন।

Full width home advertisement

Post Page Advertisement [Top]

ময়ূরাক্ষী

ময়ূরাক্ষী নদীকে একবারই আমি স্বপ্নে দেখি। নদীটা আমার মনের ভেতরে পুরোপুরি গাঁথা হয়ে যায়। অবাক হয়ে লক্ষ করি কোথা ও বসে একটু চেষ্টা করলেই নদীটা আমি দেখতেই পাই। তার জন্য আমাকে কোন কষ্ট করতে হয় না। চোখ বন্ধ করতে হয় না , কিছু না। একবার নদীটা বের করে আনতে পারলে সময় কাটানো কোন সমস্যা নয়। ঘন্টার পর ঘন্টা আমি নদী তারে হাটি। নদীর হিম শীতল জলে পা ডুবিয়ে বসি। শরীর জুড়িয়ে যায়। ঘূঘুর ডাকে চোখ ভিজে ওঠে। 

হিমু


হিমু উপন্যাসটি হুমায়ুন আহমেদ  এর হিমু চরিত্র নিয়ে লেখা হিমু সিরিজের তৃতীয় উপন্যাস। মিসির আলীর মতো হিমু ও একটি জনপ্রিয় চরিত্র যার সৃষ্ট্রা হলেন হুমায়ুন আহমেদ। এই গল্পের এই জাদুঘর হিমুর মতো আরো একটি চরিত্র হল শুভ্র। 
হিমু আমার প্রিয় চরিত্রের একটি । যখন হিমুকে নিয়ে কিছু লিখি -নিজেকে হিমু মনে হয়, এক ধরনের ঘোর অনুভব করি। এই ব্যাপারটা অন্য কোনো লেখার সময় তেমন করে ঘটে না । হিমুকে নিয়ে আমার প্রথম লেখা ময়ূরাক্ষি। ময়ূরাক্ষি লেখার সময় ব্যাপারটা প্রথম লক্ষ করি। দ্বিতীয় বার লিখলাম দরজার ওপাশে। তখনো একই ব্যাপার। কেন এই রকম হয় ? মানুষ হিসেবে আমি যুক্তিবাদী । হিমুর যুক্তিহীন, রহস্যময় জগৎ একজন যুক্তিবাদী কে কেন আর্কষণ করবে ? আমার জানা নেই । যদি কখনো জানতে পারি - পাঠকদের জানাব। 
হুমায়ুন আহমেদ , এলিফেন্ট রোড । 

একেকজনের কাছে হিমু একেক রকম। আমার কাছে হিমু এমন এক রহস্যমানব যার চারপাশের রহস্যের জাল গুটিয়ে ফেলা যাবে না। যেখানে হিমুর সৃষ্ট্রা হিমুর যুক্তিহীন রহস্যময় জগতকে নিজেই উন্মোচন করতে পারেন নি, সেখানে আমার মত ক্ষুদ্র পাঠক কিভাবে পারবে ? কিছু চরিত্র থাক না রহস্যের আড়ালে, ক্ষতি কী ?

অন্যদিকে থেকে হিমু চরিত্র টা কিছুটা ঘোলাটে টাইপের ও । তাকে কখনো বুঝা যায়, আবার কখনো আয়ত্বের একেবারে বাইরে থাকে। তাকে বিশ্বাস করলে ও ঠকতে হয় আবার অবিশ্বাস করে ও পারা যায় না । তার কথা গুলো মূলত সত্য ও না আবার মিথ্যা ও না । তার একটা অমানুষিক গুণ হলো মানুষের প্রচন্ড ভালোবাসা উপেক্ষা করা। যা সাধারণ মানুষের মাঝে নেই। 


ভয় 

৮০ পেজের এই উপন্যাসটি হুমায়ুন িআহমেদ এর মিসির আলী সিরিজ এর ষষ্ঠ বই । মিসির আলী হুমায়ুন আহমেদ এর । তিনটি রহস্যময় গল্পের এক অপূর্ব সংকলন “ভয় বই খানা”। এ বইয়ে চটুল কোন গল্পই পাবেন না । বরং আপনাকে আটকে ফেলবে রহস্যের জালে। চোখ , জ্বিন - কাফিল, সঙ্গিনী - নামের গল্পগুলো অসাধারণ। 
রাশেদুল করিম নামে এক ব্যাক্তি এক সকালে হাজির হন মিসির আলির বাসায়। তাকে খুলে বলেন নিজের সাথে গটে যাওয়া এক অদ্ভুত কাহিনি। একটি বিদেশে মেয়েকে বিয়ে করার সাতদিনের মাথায় হানিমুনে যান তারা। দ্বিতীয় রাত  এ তার ঘুম  ভাঙে স্ত্রীর কান্নায়। কারণ জানতে চাইলে বলে ভয় পেয়েছে। হঠাৎ একরাতে রাশেদুল করিমের স্ত্রী গেলে দিলেন তার স্বামীর চোখ ! এর কিছুিদিন পরে আত্মহত্যা করে তার স্ত্রী। কিন্তু কেন ঘটলো এতসব ? - চোখ বাল্যবন্ধুর সাথে লেখক একদিন  জনৈক সাধুর সন্ধানে বের হন। সেখানে বিশেষ কারণবশত েএক ইমামের কাছে আতিথেয়তা গ্রহন করতে হয়।  ইমাম সাহেব গল্প  করতে করতে তাদের সাথে তার নিজের জীবনের কষ্টগুলো অকপটে বলে যান। তার স্ত্রীর সাথে রয়েছে কফিল নামক জ্বিন । যে কিনা তার দুটি সন্তানকে মেরে ফেলে। তৃতীয় সন্তানটিকে ও মারতে চায় , যা তার স্ত্রীর গর্ভে । জ্বিনকফিল সে স্বপ্নটা দেখে বুধবার রাতে। অসম্ভব ফর্সা , বয়েস আঠার -উনিশের  একটা মেয়ে স্বপ্নে আসে ,তাকে বলে “ আপনি একটা ভয়ংকর স্বপ্ন দেখছেন। সে স্বপ্ন টা আগে আমি একা দেখতাম। হঠাৎ মেয়েটি হাপাতে থাকে এবং দৌড়াতে আরম্ভ করে। শুধু বলল “সময় শেষ , দৌড়া ও , দৌড়া ও ! তারা দু জনে দৌড়াতে থাকল সারি সারি ব্লেড বিছানা মাঠে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে ঘুমটা ভেঙ্গে যায় তার। কিন্তু  কি হয় এরপর ? -- সঙ্গিনী কি কারণে ঘটতে থাকে এমন অদ্ভুত ঘটনাগুলো ? মিসির আলী কি পারবেন এমন জটিল রহস্যের জঠ খুলতে ?


হিমুর হাতে কয়েকটি নীল পদ্ম

যাবার আগে আপনি বলে যাবেন  আপনি কে ? 
আমি বললাম , মারিয়া আমি কেউ না । আ’ইম নো বডি ( i am nobody.")
আমি আমার এক জীবনে অনেককে এই কথা বলেছি -- কখনো আমার গলা ধরে যায়নি , বা চোখ ভিজে ওঠেনি। দু’টো ব্যাপারই এই প্রথম ঘটল। 

হিমু সিরিজের ৬ নাম্বার বই। পূর্বের ৫টি চেয়ে এটি যথেষ্ট ভাল । রীতিমত অসাধারণ। আরো অসাধারণ নীলপদ্ম থিওরি। মারিয়ার বাবা আসাদুল্লাহ সাহেবের মতো সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর প্রতিটি ছেলেমেয়ের কাছে পাচটি অদৃশ্য দিয়ে পাঠান।  এই নীলপদ্মগুলি হলো প্রেম ভালবাসা। কেউ তার নীলপদ্ম একজনকে একটা করে ও দিতে পারে কেউ সব কয়টা। যে তার পাচটি নীলপদ্ম কাউকে দিয়ে দেবে সে কখনো অন্য কাউকে ভালবাসতে পারবে না। 

আমি এবং আমরা 
মিসির আলি .............রহস্যেময় যৌক্তিক মানব। তিনি তার চরিত্র অনন্য,, তার যুক্তিতে ও । মিসির আলি সিরিজের একটি উল্লেখযোগ্য বই আমি এবং আমরা। মিসির আলীর জায়গায় বসে একটু ভাবুন তো , একদিন পার্কে বসে আছেন। হঠাৎ করে এক রহস্যেময় ছেলের আগমন ঘটল , যে ছেলের জিহ্বা কালো রঙের এবং যে এসে আপনার সামনে দু দুটো খুনের কথা অকপটে  স্বীকার করলো..........বিষয়টা কেমন লাগবে ? হ্যা , আমি এবং আমরা ঠিক এমনই। 

মিসির আলির বইগুলো খেয়াল করলে দেখবেন, মানুষের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ের রহস্যেময় দিকেই এতেই আলোকপাত করেছেন লেখক হুমায়ুন আহমেদ। এতে ও তার ব্যাতিক্রম কিছু নেই । প্রথম থেকে গল্পটা পড়লে মনে হবে েএকটা পরবর্তী খুনের কথা তার শ্রদ্ধেয় স্যার মিরি আলীকে বলে যায়। মিসির আলী সিরিজের িএই বইটার মধ্যে কেমন যেন একটা গা ছমছমে ভাব আছে। তন্ময় চরিত্রটা এক ধরনের মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। এখানেই সার্থক লেখকরুপি জাদুঘর হুমায়ুন। মন আন্ধার ,জল আন্ধার , বন আন্ধার...............এই তিন আন্ধারের (শুদ্ধ বাংলায় : আধায় ) নাকি কোন তল খুজে পাওয়া যায় না .....বিষয়টা ঠিক  তাই। মানুষের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ের থেকে রহস্যেময় বিষয় হয়ত আর কিছুই হতে পারে না। 

চলে যায় বসন্তের দিন
চলে যায় বসন্তের দিন !!’

কি অদ্ভুত কথা ! বসন্তের দিন কেন চলে যাবে ? কোনো কিচুই তো চলে যায় না । এক বসন্ত যায়, আরেক বসন্ত আসে। স্বপ্ন চলে যায়, আবারো ফিরে আসে। 
আমি হিমু। 
আমি কেন বলব -- চলে যায় বসন্তের দিন’ আমার মধ্যে কি কোন সমস্যা হয়েছে ? কি সেই সমস্যা ? 
হিমু থাকবে অথচ মানুষের ভালোবাসা পাবে না এমন  হয় ? যথারীতি বইটি পড়ার সময় কখনো হাসছিলাম , কখনো অবাক হচ্ছিলাম। হিমুকে বরাবরই পড়তে গেলে আপন আপন লাগে। মনে হয় যে কথা গুলো আমি বলতে পারছি না  সেগুলো  হিমু বলে দিচ্ছে!!
এই গল্পে ফুলফুলিয়াকে আমার খুব ভাল লেগেছে, সাথে জহিরকে ও । সত্যি বলতে জহিরের ভাবনার মত আমার ও েএকটা কফিতা দিতে ইচ্ছে করছে !  হিমু শুধু হলুদ পাঞ্জাবী পরে ঘুরে বেড়ালে ‍ও সে যে আমাদেরকে কত টা রঙিন ভালোবাসা দিয়ে যায় তা কি সে জানে ? জানতে পারবে কখনো ? 

কহেন কবি কালিদাস 

মিসির আলি ভালো ঝামেলায় পড়েছেন। ঝামেলা সায়রা বানুকে নিয়ে । মেয়েটি যখনই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসে তিনি কেমন যেন গুটিয়ে যান। সায়রা বানুর সমস্যাটা জটিল । সে না - কি  ইবলিশ শয়তানের সঙ্গে কথা বলেছে। তাকে দেখেছে। সায়রা বানুর বক্তব্য মিসির আীর না পারছেন গ্রহন করতে , না পারছেন বাতিল করতে। মিসির আলী সারা জীবন যুক্তির সিড়ি ব্যবহার করেছেন। আজ তাকে যুক্তি বাইরে পা দিতে হচ্ছে। তার মনে হয় ঢুকে গেছে। রাতে ঘুম ভাঙলে তিনি আতংকিত বোধ করেন। তার মনে হয় ইবলিশ শয়তানের সঙ্গে সম্ভবত তার ও দেখা হবে। 

আঙ্গুল কাটা জগলু 

বেশ ভালোই। গতানুগতিক হিমুর অন্যান্য গল্পের মতই। আমরা যে মেঘ দেখি সেই মেঘেদের ও কিন্তু মন মেজাজ আছে তারা রহস্যে করতে পছন্দ করে। অনেক সময় দেখা যায় ঘন কালো মেঘে চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসছে যেকোন মূহুর্তে বৃষ্টি  নামবে কিন্তু তখন আর বৃস্টি হয় ন। আমার দেখা যায় ঝলমলে রোদে ভোরা আকাশ কিন্তু হুট করে তখন কোথা থেকে মেঘ এসে ঝুপ করে একপশলা বৃষ্টি এসে পরে। আষাঢ়ের শেষ কিংবা শ্রাবণের কোন একদিন সন্ধ্যা হবে হবে এমন এক সময় হিমু দাড়িয়ে আছে ফুলবাড়ি বাস টার্মিনালের নর্দমার ডান পাশে। হিমু সেখানে দাড়িয়ে আকাশ দেখছে। আকাশ মেঘে মেঘে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে, যেকোন সময় বৃষ্ঠি নামবে। 
এমন সময় মতি নামের একজন এসে বলল আঙুল কাটা জগলু ভাই তাকে ডাকছে আঙুল কাটা জগলু ভাই অতি পরিচিতি ব্যাক্তি । পত্রিকায় ভাষায় শীর্ষ সন্ত্রাসী । বাংলাদেশ সরকার তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষনা দিয়েছে। সন্ত্রাসী হলে ও উনি শিক্ষিত । ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রী পাওয়া মানুষ। তার পড়াশুনা েইংরেজী সাহিত্য। আঙুল কাটা জগলু নাম হলে ও তার সব আঙুল ঠিক আছে। শুধূ ঠিক না বেশ ভালো মত ঠিক আছে । লম্বা লম্বা আঙুল । মানুষটার চোখ সুন্দর, চেহারা । মাথা  ভর্তি চুল। 

বৃহন্নলা 
মিসির আলী আরেকটি উপাত্থ্যান। 

মিসির আলীর এমনই এক চরিত্র , যার তুলনা সে নিজেই। আমাদের  চারপাশের অমীমাংসিত কুহেলিকাময় কিংবা রহস্যের মোড়কে আবৃত অনেক ঘটনায় আমরা যখন বিমূঢ়, নির্বাক কিংবা বিশ্বাস করতে তাখি। অসত্যকে তখনই  মিসির আলী খুলতে থাকে অমোঘ নিয়তির একেকটি পর্দা। 
আমাদের আটপৌরে জীবনে মিশে থাকার পর ও মিসির আলী এমন এক ক্ষ্যাপা, যে পরশপাথর খোজে এবং পায় ও। 

সমাপ্তি 


No comments:

Post a Comment

Advertisement